ইমালশন প্লান্ট:
ইমালশন প্রস্তুতের জন্য আমাদের দেশের পাটকলগুলোতে তিন ধরনের
মেশিন প্রচলিত আছে।
(১) প্যাডেল টাইপ মিকচার মেশিন: মেশিনটি দেশীয় প্রযুক্তিতে
তৈরী ও অধিক প্রচলিত। স্টিলের তৈরী মিকচার ট্যাংকের ভিতরে প্যাডেল ঘুরিয়ে ইমালশন প্রস্তুত
করা হয়। প্রস্তুত প্রনালী নিচে আলোচনা করা হলো-
প্রথমে প্রয়োজন অনুযায়ী সমপরিমাণ তেল ও ইমালসিফায়ার ট্যাংকের
মধ্যে নেয়া হয়। ১৫-২০ মিনিট প্যাডেল ঘুরিয়ে একটি সাদা রংয়ের পেস্ট তৈরী করা হয়। আবশিষ্ট
তেল ধীরে ধীরে ৩০-৪০ মিনিটে পেস্টের সাথে মিশানো হয়। যা হাতে নিলেও সহজে গরিয়ে পড়ে
না বা ভেঙ্গে যায় না। এই মিশ্রণে ধীরে ধীরে ২০ মিনিট (মোটামুটি) ধরে প্রয়োজনীয় পানি
দেয়া হয়। ইমালশন তৈরী হয়ে গেলে রিজার্ভ ট্যাংকে স্থানান্তর করা হয়। কিছুটা গরম ইমালশন
ভাল ফল দেয় বলে (বিশেষ করে শীতকালে) ইমালশন ট্যাংকে স্টিম সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়।
পুরো প্রক্রিয়ায় কোনো সময়ের জন্যই প্যাডেলের ঘূর্ণন বন্ধ করা যাবে না। এজিটেটরের আদর্শ
ঘূর্ণন মিনিটে ১৫০ পাক। ঘূর্ণন কম হলে মিশ্রণ ভাল হবে না এবং ভাল থাকবে না। দ্রুত পানি
ও তেল আলাদা হয়ে যাবে।তৈরী ইমালশন ৪ ঘন্টার মধ্যে ব্যবহার করা উচিত। ভাল ইমালশনের স্থায়িত্বকাল
কমপক্ষে ২৪ ঘন্টা হওয়া প্রয়োজন।
(২) ও-ডি ব্যাচ মিকচার মেশিন: এই মেশিমনটি জেমস মেকি কোম্পানীর
তৈরী। এর কার্য পদ্ধতি প্যাডেল টাইপ মিকচার মেশিনের মতোই তবে সব কিছুই স্বয়ংক্রিয়। ফলে
এটার উৎপাদন ক্ষমতা অধিক। প্রতি ঘন্টায় ৪ টন পর্যন্ত পাট প্রক্রিয়ার উপযোগী ইমালশন
প্রস্তুত করা যায়। এই মিশ্রণ হতে ভাল মানের ইমালশন তৈরী করা সম্ভব হয়।
(৩) র্যাপিসনিক ইমালশন প্লান্ট: এটিও স্বয়ংক্রিয় মেশিন। উপাদানগুলো
স্বনিয়ন্ত্রিতভাবে ছোট একটি পাত্রে আসে। দ্রুত ঘূর্ণায়মান একটি র্যাপিসনিক পাম্পের
মধ্যে ইমালশনের মিশ্রণ তৈরী হবার সাথে সাথেই ব্যবহার উপযোগী হয়ে যায়। নিম্নোক্তভাবে
উপাদানগুলো নির্ধারণ করা হয়-
তেল (JBO)-৪৯.৯৩%
পানি-৫০.০০%
ইমালসিফায়ার- ০.০৭%
তৈরীকৃত ইমালশন পাটে প্রয়োগের সময় ইমালশনের সাথে শুধু পানি
যোগ করে উপাদানগুলোর নির্ধারিত হার ঠিক রাখা যায়।
Comments
Post a Comment